শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫

৮ স্বামীর কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা আদায়, নবম বিয়ের সময় পুলিশের হাতে আটক

প্রকাশিত: শুক্রবার, আগস্ট ১, ২০২৫

ভারতের মহারাষ্ট্রের নাগপুরের এক চায়ের দোকান। সদ্য পরিচিত এক পুরুষের সঙ্গে বসে কথা বলছেন সামিরা ফাতিমা। আপাতদৃষ্টিতে বিষয়টা স্বাভাবিক মনে হলেও আসলে তা নয়।

পুলিশ নজর রাখছিল অনেক দিন ধরেই। অবশেষে তাকে হাতেনাতে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু ঠিক কী কারণে তাকে গ্রেফতার করা হলো?

 

কর্মকর্তাদের মতে, অভিযুক্ত নারী সামিরা আর পাঁচজনের মতো সাধারণ নয়। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে তিনি প্রেম, বিশ্বাস ও বিয়ের নাম করে প্রতারণা করে আসছেন। একের পর এক বিয়ের পর স্বামীদের থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

 

পেশায় এক সময় স্কুল শিক্ষিকা ছিলেন সামিরা ফাতিমা। কিন্তু শিক্ষকতার চাকরি করে পোষাচ্ছিল না তার। বাড়তি আয়ের জন্য নেমে পড়েন বিয়ের নামে প্রতারণায়।

 

এভাবে অন্তত আটজন পুরুষকে বিয়ে করেছেন। তবে প্রতিটি বিয়েই ছিল পরিকল্পিত প্রতারণার অংশ। তার লক্ষ্য ছিল একটাই, টাকা। এজন্য আর্থিকভাবে সচ্ছল এবং বিবাহিত মুসলিম পুরুষদের বেছে নিতেন তিনি। আর সুযোগ বুঝেই প্রত্যেকের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করতেন।

সামিরার কৌশল ছিল নিখুঁত। ঘটকালির ওয়েবসাইট আর ফেসবুকের মতো প্ল্যাটফর্মে নিজেকে ডিভোর্সি ও সন্তানের মা বলে পরিচয় দিতেন। এরপর আবেগঘন গল্প শুনিয়ে মন জয় করতেন।

 

পুলিশ জানিয়েছে, সামিরার একটি দল ছিল। তারা পাত্র দেখতেন। যখন সম্পর্ক গাঢ় হত, তখন হতো বিয়ে। তারপরই শুরু হতো আসল খেলা। আইনি হুমকি, সামাজিক বদনামের ভয় দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি।

 

প্রথম দিকে লোকলজ্জা ও সামাজিক সম্মান নষ্টের ভয়ে প্রতারিত যুবকদের কেউ পুলিশে অভিযোগ করেননি। তবে সম্প্রতি দু’জন পুলিশের দ্বারস্থ হন। একজনের অভিযোগ, বিয়ের পর নিজের ইচ্ছায় তাকে ছেড়ে যান সামিরা। তারপর বিভিন্ন ভাবে ব্ল্যাকমেইল করে ৫০ লাখ টাকা আদায় করেন।

অপরজনের অভিযোগ, তার কাছ থেকে এ পর্যন্ত ১৫ লাখ টাকা নিয়েছেন সামিরা। দুই স্বামীর অভিযোগের পর সামিরাকে ধরতে অভিযানে নামে পুলিশ। 

 

অবশেষ নবম বিয়ে করতে গিয়ে গত মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) পুলিশের কাছে হাতেনাতে ধরে পড়েন সামিরা। নাগপুর পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত চলছে। সামিরার সঙ্গে আর কে কে আছে, সবই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। 

আরো পড়ুন