বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫
প্রকাশিত: সোমবার, জুলাই ১৪, ২০২৫
দুই দফায় ১০ হাজার টাকা নিয়েও কনে দেখাতে না পেরে ক্ষুব্ধ হয়ে ঘটক হাবিব উল্লাহকে পিটিয়ে ও পানিতে চুবিয়ে হত্যা করেন কামাল মীরা নামে এক হবু বর। হাবিবের মরদেহ উদ্ধার ও তার স্ত্রীর মামলা পর পুলিশের তদন্তে এই তথ্য উঠে আসে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে অভিযুক্তকেও।
রোববার (১৩ জুলাই) দুপুরে চাঁদপুরের পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ আব্দুর রকিব প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান।
তিনি জানান, ১১ জুলাই বেলা ১১টার দিকে মতলব উত্তর উপজেলার সাদুল্লাহপুর ইউপির গোপালকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পূর্ব পাশে পুকুর থেকে হাবিবের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে তার স্ত্রী অজ্ঞাতদের আসামি করে মতলব উত্তর থানায় মামলা রুজু করেন। পরে নারায়ণগঞ্জ থেকে কামাল মীরাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বাড়ি বরিশাল জেলার চরমোনাই রাজারচর গ্রামে।
পুলিশ সুপার জানান, জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, হাবিব উল্লাহর সঙ্গে কামালের পরিচয় তিন থেকে চার মাস আগে। হাবিব উল্লাহ পেশায় রিকশাচালক ছিলেন। তিনি যাত্রাবাড়ী এলাকায় রিকশা চালাতেন। কামাল মীরা ডেমরার কোনাপাড়া এলাকায় একটি প্রেসের কারখানায় নৈশ প্রহরীর কাজ করতেন।
তিনি জানান, কামাল মিয়া যখন দ্বিতীয় বিয়ে করার জন্য মনস্থির করেছেন, তখনই তার পরিচয় হয় হাবিবের সঙ্গে। হাবিব জানান, তার কাছে বিয়ের জন্য মেয়ে আছে এবং তিনি কামালের বিয়ে ঘটকালি করতে চান। প্রায় এক মাসে আগে হাবিব কামালের কাছ থেকে নগদ ছয় হাজার টাকা নেন। এরপর গত ১০ জুলাই হাবিব মতলব উত্তর থানাধীন তার শ্বশুরবাড়ি এলাকায় কামালকে মেয়ে দেখানোর কথা বলে আবারও নগদ চার হাজার টাকা নেন। ওই দিন বিকেলে তারা মুরাদপুর এলাকা থেকে মতলব উত্তর থানা এলাকার উদ্দেশে রওনা হন। ওই দিন সন্ধ্যায় তারা প্রথমে শাহ সোলেমান লেংটার মাজারে আসেন। মাজারে অনেকটা সময় ঘোরাঘুরির পর কামাল মেয়ে দেখানোর তাগাদা দেন। কিন্তু হাবিব নানাভাবে সময় ক্ষেপণ করতে থাকেন। পরে হাবিব তাকে রাত ১১টার দিকে গোপালকান্দি বিদ্যালয়ের পূর্ব পাশে পুকুর পাড়ে নিয়ে আসেন। সেখানে বসে তারা গল্প করার সময় হাবিব উল্লাহ তাদের সঙ্গে থাকা মোবাইল বন্ধ করে দেন। এসময় উভয়ের মধ্যে পুকুরের পাকা সিঁড়ির ওপর ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এতে তারা দুই জনই জখম হন। এক পর্যায়ে তারা পানিতে পড়ে যান।
এসপি জানান, আসামি কামাল হাবিব উল্লাহকে অতর্কিত তলপেটে ও অণ্ডকোষ বরাবর লাথি মারেন। এতে হাবিব দুর্বল হয়ে পড়লে তাকে পানিতে চুবিয়ে ধরেন। এসময় হাবিব তার ডান হাতের দুইটি আঙ্গুলে কামড় দিয়ে জখম করে। পরে তিনি নিস্তেজ হয়ে পড়লে কামাল নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার কদমতলী এলাকায় আত্মগোপনে চলে যান।
পুলিশ সুপার আব্দুর রকিব বলেন, পুলিশ প্রথমে হত্যার কোনো সূত্র পায়নি। পরে বিভিন্ন সূত্রের তথ্যের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।