মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫

রাতের আঁধারে কবর থেকে মরদেহ তুলে বাড়ির উঠানে পুনরায় দাফন!

প্রকাশিত: সোমবার, জুলাই ১৪, ২০২৫

সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার সোনামুখী গ্রামে ঘটেছে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। মৃত্যুর পর তিন দিন পার হলেও মৃত আব্দুস সাত্তারকে (৬৫) পুনরায় দাফন করা হয়েছে তার নিজ বাড়ির উঠানে। এ ঘটনায় পুরো গ্রামজুড়ে চলছে আলোচনা ও জল্পনা।

ঘটনার সূত্রপাত গত বৃহস্পতিবার (৯ জুলাই)। ওই দিন মারা যান আব্দুস সাত্তার। পরিবারের সদস্যরা সেদিনই তাকে সোনামুখী জান্নাতুল বাকী কবরস্থানে দাফন করেন। পরদিন কুলখানি এবং দোয়া মাহফিলের আয়োজনও করা হয়। সবকিছুই চলছিল স্বাভাবিকভাবে। কিন্তু রোববার (১৩ জুলাই) গভীর রাতে হঠাৎ করেই ঘটনার মোড় ঘুরে যায়। গভীর রাতে কে বা কারা কবর খুঁড়ে মরদেহ তুলে নিয়ে যায় এবং সকালে দেখা যায়, ওই মৃত ব্যক্তির বাড়ির উঠানে একটি নতুন কবর।

মৃতের ভাতিজা মজনু রহমান বলেন, সকালে খবর পেয়েছি বাড়িতে কবর খুঁড়ে মরদেহ দাফন করা হয়েছে। তারপর নিশ্চিত হওয়ার জন্য কবরস্থানে যেয়ে কবর খুঁড়ে দেখি মরদেহ নেই। এরপর বাড়িতে চলে আসছি। কারা করেছে তা জানা নেই।

স্থানীয় গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আব্দুস সাত্তার ছিলেন একজন তরিকাপন্থি ব্যক্তি এবং ওরশ-মাহফিল আয়োজন করতেন। জীবিত থাকতেই তিনি নিজের বাড়ির উঠানেই দাফনের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। তবে পরিবারের সদস্যরা সেই ইচ্ছাকে অগ্রাহ্য করে কবরস্থানে দাফন করেন। এ কারণেই তার ভক্তরা কবরস্থান থেকে মরদেহ তুলে নিজ বাড়িতে পুনরায় দাফন করেছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা নবীর উদ্দিন শেখ বলেন, রাতের বেলায় কবরস্থানে খোঁড়াখুঁড়ির শব্দ শুনে এগিয়ে গেলে দেখি পাঁচজন পাঞ্জাবি পরা লোক কবর খুঁড়ছে। আমাকে ধমক দিয়ে চলে যেতে বলে। আমি ভয় পেয়ে সেখান থেকে সরে আসি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য ও কবরস্থানের তত্ত্বাবধায়ক বেল্লাল হোসেন বলেন, তরিকাপন্থি ভক্তরা শুরু থেকেই কবরস্থানে দাফনের বিরোধিতা করছিলেন। জানাজার আগ মুহূর্তেই তারা বলেছিলেন, মরদেহ কবরস্থানে দাফন না করে নিজ বাড়িতে দাফন করতে হবে। সম্ভবত তারাই রাতের আঁধারে মরদেহ তুলে এনে বাড়িতে পুনরায় দাফন করেছেন। তবে কারা এটি করেছে, সঠিকভাবে কেউ বলতো পারছে না। 

তরিকাপন্থি ব্যক্তিদের সঙ্গে সার্বিক বিষয়ে কথা বলার চেষ্টা করা হয়। তবে এদের মধ্যে কেউই কিছু জানেন না বলেই জানিয়েছেন। আর কেউ কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি। 

কাজিপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। কবরস্থান থেকে লাশ তুলে নিয়ে গিয়ে বাড়িতে দাফনের ঘটনা ঘটেছে। তবে এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।

আরো পড়ুন