সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫
প্রকাশিত: রবিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৫
তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে জাহিদুল ইসলাম পারভেজ নামে এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। নিহত শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র। শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসেই এ হত্যাকাণ্ড হয়। তার মৃত্যু মানতে পারছেন না তাঁর স্বজন ও এলাকাবাসী।
জাহিদুল ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার ৫ নম্বর বিরুনীয়া ইউনিয়নের কাইচান গ্রামের কুয়েতপ্রবাসী জসিম উদ্দিনের ছেলে। তিনি প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে দুই নারীকে নিয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ হাসাহাসির জেরে গতকাল বিকেলে একদল যুবক তাঁকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেন।
এদিকে সন্তানের মৃত্যুর খবর পেয়ে গতকাল রাতেই বিমানে ওঠেন প্রায় ৯ বছর ধরে কুয়েতে থাকা বাবা জসিম উদ্দিন। আজ রোববার (২০ এপ্রিল) সকাল সাতটার দিকে তিনি গ্রামের বাড়িতে এসে পৌঁছান।
জাহিদুলের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, ছেলের শোকে পাগলপ্রায় মা পারভীন আক্তার আহাজারি করে অচেতন হয়ে পড়েন। জ্ঞান ফেরার পর আবার কান্না শুরু করছেন।
পারভীন আক্তার বলেন, ‘কী অপরাধ আছিন আমার পুতের। কের লাইগ্যা আমার পুতেরে মারল হেরা। আমার স্বর্ণের পুতেরে হেরার মাইরালাইলো।’
জাহিদুলের বাবা জসিম উদ্দিন বলেন, ‘পুরো জীবনটাই শেষ করে দিলাম সন্তানদের লাগি। সন্তানের জন্য টাকা-পয়সার দিকে তাকাই নাই, প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াইতেছি। আমার যত আয়রোজগার সব দুই সন্তানের পিছনে খরচ করি। আমার দুই সন্তানের মতো মেধাবী এলাকায় খুব কম।’
তিনি বলেন, কী অপরাধ ছিল আমার ছেলের? কেন নৃশংসভাবে হত্যা করল? আমারে মাইরালাইতো। আমার সন্তানই যদি না থাকে আমার বাঁইচ্যা থাইকা কী লাভ?
আহাজারি করে তিনি বলেন, তারা দুইটা হাত-পা ভাইঙ্গা দিত। খালি মুখ দিয়া আমায় আব্বা কইয়া ডাক দিত। আমি আমার সন্তানের আব্বা ডাকটা শুনতাম। যারা আমার সন্তানকে হত্যা করছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। প্রকাশ্যে হত্যাকারীদের ফাঁসি হলে আমার ছেলের আত্মায় শান্তি পাইব।’
এদিকে আজ রোববার (২০ এপ্রিল) পারভেজের ভাই হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে বনানী থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এলএলবি ও ইংরেজি বিভাগের তিন ছাত্র মাহাথি, মেহেরাব, আবুজর গিফারী ছাড়াও আরও পাঁচ জনকে আসামি করা হয়েছে।