শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫
প্রকাশিত: রবিবার, জুন ২২, ২০২৫
খুলনার আর একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটিও ভিসিবিহীন হয়ে গেলো। গতকাল শনিবার এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর(ভিসি) প্রফেসর ড. শেখ মোঃ এনায়েতুল বাবর পদত্যাগ করায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। যদিও নর্থ ওয়েস্টার্নের ভিসি পদত্যাগপত্র লিখেছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব বরাবর। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী চ্যান্সেলরের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার কথা। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চাইলে পাওয়া যায়নি পদত্যাগ করা ভিসি প্রফেসর ড. শেখ মোঃ এনায়েতুল বাবরকে। তবে জুন ক্লোজিংয়ের এক সপ্তাহ বাকী থাকলেও এভাবে একের পর এক ভিসিবিহীন হয়ে পড়ায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো চরম আকারে আর্থিক সংকটে পড়বে বলেও আশংকা সংশ্লিষ্টদের।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে সরকার পতনের দীর্ঘ ১০ মাস পর পদত্যাগ করেন আওয়ামী লবিংয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত খুলনা নর্থ ওযেস্টার্ন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ড. শেখ মোঃ এনায়েতুল বাবর। এর আগে একাধিকবার শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে সরকারের বিভিন্ন মহলে তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরও কোন ফল হয়নি। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীরা এক দফার আন্দোলন শুরু করে ভিসি ও রেজিস্ট্রারের দপ্তরে তালাবদ্ধ করে দেওয়াসহ তাদেরকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে। এরপর গতকাল শনিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব বরাবর পদত্যাগপত্র পাঠান ভিসি।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী তাশিক জানান, এখন থেকে অধ্যাপক ড. শেখ মোঃ এনায়েতুল বাবর আর নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ভিসি নেই। তবে ভিসির ব্যবহৃত মোবাইলে একাধিকবার রিং দেওয়া হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। সামাজিক মাধ্যম থেকে তার স্বাক্ষরিত একটি পদত্যাগপত্র পাওয়া যায়। অর্থাৎ ভিসির পদত্যাগের পর এখন খুলনার বেসরকারি এই বিশ্ববিদ্যালয়টিও অভিভাবকশূণ্য হয়ে পড়লো।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল সংলগ্ন নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটিটি বর্তমানে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে রয়েছে। রূপসা সেতু বাইপাস সড়কের পাশের স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল। এজন্য বেশকিছুদিন ধরে শিক্ষার্থীরাও অস্থায়ী ক্যাম্পাসের সামনে বিক্ষোভও করে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সাড়া দেননি ভিসিসহ কর্তৃপক্ষ। এছাড়া উক্ত ভিসির বিরুদ্ধে রয়েছে আওয়ামীকরণ করা ছাড়াও নানা দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ। এমনকি তিনি বিগত জুলাই-আগষ্টের আন্দোলনের একজন সরাসরি বিরোধী ব্যক্তি। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ কিভাবে একজন ফ্যাসিস্ট হয়েও এতোদিন তার পদে থাকেন সেটিই প্রশ্ন।
সূত্রটি জানায়, খুলনা নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটিতে উপাচার্য হিসেবে হিসেবে নিয়োগদানের পূর্বে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসিতে প্রেরিত তাঁর প্যানেল প্রাথমিকভাবে বাদ পড়ে। পরে আওয়ামী লবিংয়ে তিনি এককভাবে ভিসি মনোনীত হন।
এদিকে, শিক্ষার্থীরা গত বৃহস্পতিবার ভিসি ও রেজিস্ট্রারের দপ্তরে তালা মেরে দিয়ে তাদের দু’জনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করলেও শুধুমাত্র ভিসি পদত্যাগ করেন।
পরবর্তীতে শনিবার রাতে “উদীয়মান ফ্যাসিস্ট মুক্ত করার লক্ষ্যে নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি এর ২নম্বর ভবন অনির্দিষ্ট কালের জন্য তালা মেরেছে শিক্ষার্থীরা।
যতদিন দাবি পূরণ না করবে কর্তৃপক্ষ তত দিন এই তালা ঝুলবে বলে ‘ এমনটি জানিয়েছেন তারা।
কিন্তু রেজিস্ট্রারের বিষয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি।